আমন ধানের দরপতনে চন্দনাইশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ধার দেনা ও ঋণের টাকা পরিশোধ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে সারাবছর কি খেয়ে বাঁচবে এ দুশ্চিন্তায় এখন কৃষকদের চোখের ঘুম নাই।
এলাকাবাসী ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। এ এলাকায় আমন, ইরি ও বোরো ধানের চাষাবাদ করা হলেও অনেক কৃষকই আমন ধানের উপর নির্ভরশীল। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধান বাজারে বিক্রি করে দেনা পরিশোধ শেষে অবশিষ্ট ধান বছরের খাবার হিসেবে গোলায় মজুত করে রাখে। গ্রাম-গঞ্জের কৃষকেরা ছেলে-মেয়ে পড়াশোনা, কাপড়-চোপড়সহ পারিবারিক খরচ করার উৎস হচ্ছে ধান। কিন্তু এ বছর ধানের দাম ভালো না থাকায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক প্রধান ফসল আমনের উপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যে কোন কোন এলাকায় উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর বিআর ২৩, ব্রি-ধান ৭৬, ৪৯ ধানের ফলন সবচেয়ে বেশি ভালো হয়েছে।
চন্দনাইশ পৌরসভার এলাকার কৃষক ফরিদুল আলম বলেন, তিনি এ মৌসুমে ৩ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছেন ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি শ্রমিকসহ অন্য সব মিলে প্রায় ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে ধানের দরপতন হওয়ায় কম মূল্যে ধান বিক্রি করে লোকসান হয়েছে তার। একইভাবে হাশিমপুরের কৃষক আহমদ হোসেন বলেন, গতবারের তুলনায় এ বছর ধানের দাম অনেক কম। বিঘা প্রতি যে ধান পেয়েছি তা বিক্রি করে ধার দেনা ও ব্যাংকের ঋণ শোধ করলে ও খরচ বাদ দিলে হয়তো সমান সমান দাঁড়াবে। সারাবছর পরিবার-পরিজন নিয়ে কি খেয়ে বাঁচব ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কিভাবে যোগাব সেই দুশ্চিন্তায় এখন চোখে ঘুম নেই তার।
ধান ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন বলেন, এলাকায় চাল বিক্রির উপর ধানের দাম নির্ভর করে। তাছাড়া বাইরের বড় বড় ব্যবসায়ীরা না আসলে ধানের দাম বাড়ে না। ওইসব ব্যবসায়ীদের গোডাউনে গতবারের ধান মজুত আছে বলে এবার এলাকায় আসছে না। যে কারণে ধানের দাম বাড়ছে না বলে তিনি মনে করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাসান ইমাম বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বর্তমানে ধানের দরপতনের কথা স্বীকার করেছেন।