১৯ বছর বয়সে একটি ফুটবল ম্যাচ খেলতে গিয়ে আহত হন ডাচ ফুটবলার আব্দুল হক নুরি। সে থেকে ২ বছর ৯ মাস ছিলেন কোমায়।
ডাক্তাররা তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখেছিলেন, না দেখার মতো করে। জানিয়েছিলেন, সারাজীবনই কেটে যেতে পারে কোমায়। তবে সৃষ্টিকর্তা চাইলে কিনা সম্ভব! অবশেষে ৩৩ মাস পর কোমা থেকে জাগলেন আয়াক্স আমস্টারডামের ফুটবলার নুরি।
নেদারল্যান্ডসের অন্যতম প্রতিভাধর মিডফিল্ডার ছিলেন নুরি। ডাচদের বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলেছেন। ২০১৬ সালে ১৮ বছর বয়সে আয়াক্সের মূল দলের হয়ে মাঠে নামার সুযোগ মেলে। এর এক বছর পর বদলে যায় নুরির জীবনপথ।
আয়াক্সের হয়ে প্রথম মাঠে নামার ৯ ম্যাচ পরে ঘটে দুর্ঘটনা। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে জার্মান ক্লাব ভেরদার ব্রেমেনের বিপক্ষে প্রাক-মৌসুম ম্যাচে খেলতে নামেন নুরি। খেলার মাঝে কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়া অ্যাটাক হয় নুরির। ব্রেইনে আঘাত পাওয়ায় চলে যান কোমায়।
২০১৮ সালের আগস্টে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ২২ বছর বয়সী নুরিকে। এরপর থেকে নুরির মধ্যে পরিবর্তন দেখে পরিবারের লোকেরা। সম্প্রতি ডাচ টিভির বিশেষ এক প্রোগ্রামে নুরির ভাই আব্দুর রহিম জানান, অভাবনীয় কিছুই দেখতে পাচ্ছেন তারা।
‘যখন থেকে সে বাড়িতে, তারপর থেকে সে ভালো অবস্থার দিকে যাচ্ছে। সে বুঝতে পারছে যে, তার চেনা পরিবেশে আছে। সে আর কোমায় নেই। জেগে ওঠেছে। খাচ্ছে, ঢেকুর তুলছে, ঘুমাচ্ছে, হাঁচি দিচ্ছে। যদিও সে এখনো বিছানা ছেড়ে বেরোতে পারছে না।’-নুরিকে নিয়ে বলেন তার ভাই আব্দুর রহিম। নুরির বাবা মোহাম্মদ বলেন, ‘তাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
অসুস্থ হলেও নুরির মধ্যে ফুটবলের প্রতি আবেগ এখনো একই রকম জানিয়ে তার ভাই বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে ফুটবল ম্যাচ দেখি। খেলা দেখার সময় আমরা খেয়াল করি যে সে এটা পছন্দ করে। প্রায়ই আবেগ দেখায়, মাঝে মাঝে মুচকি হাসে।’
নুরিকে ভবিষ্যতের ডাচ তারকা ভাবা হত। আবার কি ফিরে আসতে পারবে নুরি? প্রশ্নটা সময়ের কাছে তোলা থাক।