অনলাইন ডেস্ক : বছরজুড়ে দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে এডিস মশা। বিশেষ করে রাজধানীবাসী প্রায় পুরো বছর কাটিয়েছে ডেঙ্গু আতঙ্কে। এখনো ডেঙ্গু আতঙ্ক কাটেনি ঢাকাবাসীর। ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত ১৯ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৫০ হাজার ১৭৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৩১৯ জন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন এক লাখ ৯৫১ জন। অর্থ্যাৎ ১৯ বছরে যতো রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে, শুধু এ বছরই তার দ্বিগুণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। ঢাকার দুই সিটির করপোরেশনের ব্যর্থতার কারণে এ বছর ডেঙ্গুতে এতো বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করেছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এখনো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে দেশবাসী। ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে (২৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে ২৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টা পর্যন্ত) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২জন। একইসময়ে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ১৮জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১৪৮জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে এই তথ্য জানায়। আইইডিসিআর জানায়, ১৬৬টি মৃত্যুর ঘটনা পর্যালোচনার জন্য এসেছে, এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ২৩৪টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ১৪৮টি মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডেথ রিভিউ কমিটি।
চলতি বছরে স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত বিষয় ছিল ডেঙ্গু। ২০১৯ সালে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে দেখা দেয়া ডেঙ্গু- যা জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মহামারী রূপ ধারণ করে।
তবে, সরকারি হোক আর বেসরকারি, এটাই এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মৌসুমে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এত রোগী কখনই হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। এমনকি এই সংখ্যা গত ১৯ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে, ২০১৮ সালে দেশে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ১৪৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত ১৯ বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মোট রোগী ৫০ হাজার ১৭৬ জন।
২০০২ সালে দেশে প্রথম ব্যাপকভাবে ডেঙ্গু রোগী দেখা যায়। সে সময় ৫ হাজার ৫১১ রোগী ভর্তি হয়েছিল। ২০০১ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমলেও ২০০২ সালে রোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর থেকে ক্রমান্বয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।