আজকের এই ক্রান্তিলগ্নে অনেকেই পুরোনো পেশায় ফিরেছেন। আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আর্ত মানবতার সেবায় ডাক্তারি পেশায় ফিরেছেন। আর বাংলাদেশের বাটপার কিছু নেতারা গরীব জনতার সাহায্য/ত্রাণ লুটপাট করতে ফিরেছেন চুরি’র পেশায়! ঘাড় ত্যাড়া এসব অমানুষরা কবে সোজা হবে? এরা কি আদৌ মানুষ কবে হবে!
বর্তমান প্রেক্ষিতে একটা গল্প বলছি-
সাপ আর ব্যাঙের খুব ভাব, খুব বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু সাপ ছিল খুব অহংকারী। অহংকারবশত সাপ তার স্বভাব সুলভ ভঙ্গিতে ডানে বাঁয়ে হেলে দুলে আঁকাবাকা হয়ে চলতো। বর্ষাকালে একদিন দুই বন্ধু ঘুরতে বের হলো। সাপ তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হেলে দুলে চলতে লাগলো। এতে একসাথে চলতে সমস্যা হচ্ছিল ব্যাঙের। দু’জনের চলার প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্দেশ্যে সাপকে ব্যাঙ বলল, ‘বন্ধু, তুমি একটু সোজা হয়ে হাটলেইতো পারো।’
সাপ বলল, ‘বন্ধু, যারে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা। তুমি আসলে আমাকে পছন্দ করোনা তাই আমার চলন তোমার কাছে বাঁকা লাগে।’ ব্যাঙ বলল, ‘ব্যাপারটা তা নয় বন্ধু। এঁকেবেঁকে চলার কারণে আমি তোমার পাশাপাশি হাটতে পারছিনা।’ সাপ ফোঁসফোঁস করে বলল, ‘বাপ দাদা চৌদ্দ গুষ্টি ধরে আমরা এভাবেই চলে আসছি; আর তুমি একটা বিচ্ছিরি ব্যাঙ আমাকে আসছো পথ চলা শেখাতে!’
একেতো ব্যাঙের চেয়ে লম্বা বলে অহংকারের শেষ নেই তার ওপর সাপের অন্তর ভরা বিষ। ব্যাঙ যতই বোঝাতে চায় সাপ ততই ফোঁসফোঁস করতে থাকে। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে কয়েকজন লোক ছুটে এসে সাপকে মেরে খেজুর গাছের ডালে সোজা করে ঝুলিয়ে রাখে। ব্যাঙ তখন আফসোস করে বলে, ‘সেইতো সোজা হলে বন্ধু, তাও মরণের পরে।’
গোঁড়ামি অহংকার আর অন্তর ভরা বিষ নিয়ে যারা ধর্মের নামে মানুষকে বাঁকা পথে পরিচালনা করেন, মানুষ কে গালি গালাজ করেন, আশা করি তারা এবার একটু সোজা পথে চলবেন। হিন্দু মুসলিম সবাই এক সৃষ্টিকর্তারই সৃষ্টি। কাউকে হেয় করার অধিকার কারও নেই। নিজে সৎকর্ম করুন ও অপরকে ভাল কাজের পরামর্শ দিন। এই সংকট সময়ে যারা কিছু দান করে সেলফি/ছবি তুলে পোষ্ট দিয়ে নিজে মহান সাজেন তারাও ভন্ডামি বাদ দিয়ে পারলে আল্লাহকে স্মরণ করে মানবতার সেবায় নিঃস্বার্থ এগিয়ে আসুন।
সামান্য কিছু সাহায্য দিয়ে ছবি তুলে পোষ্ট দেয়াটা কোনও বিবেকবান মানুষের কাজ নয়। সবাই ভিক্ষুক নন। কাজ করে খায়। আজ পরিস্থিতির শিকার। লাইনে দাঁড়াতে তাঁদের আত্মসম্মানে লাগে, এঁদের ছবি তুলে সমাজে তাঁদের হেয় করবেন কোন বিবেকে! সমাজে যারা কালো কারবারি, সুদ- ঘুষ, লোক ঠকানোর ধান্দা, গরীবের হক মেরে খাওয়া, সাহায্য বা ত্রাণের মাল লুটপাট করে খাওয়া যাদের অভ্যাস তারাও একটু সোজা হোউন। মরণের পরে সোজা হয়ে লাভ নেই। আল্লাহ হেদায়েত করুন।
আজকের এই মহিমান্বিত দিনে আল্লাহ সবাইকে ক্ষমা করুন। থেমে যাক করোনার ঝড়। মানুষের ভেতরের পশুত্বও নিপাত যাক। রোগ বালাই মহামারী থেকে আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। সুস্থ হোক জগৎ। সুস্থ ও নিরাপদ থাকুক মানুষ। ভাল থাকুক বাংলাদেশ।