অনলাইন ডেস্ক ঃ বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য একটি টাইম ফ্রেম দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে আমরা তাদের নির্ধারিত একটা টাইম ফ্রেম করে দেব। এর মধ্যে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তা না ভাঙলে আমরা অ্যাকশন নেব। এ জাতীয় ভবন ভেঙে ফেলার কারিগরি প্রস্তুতি আমাদের আছে।’
শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ.ম. রেজাইল করিম এ কথা বলেন। ইউটিলিটি রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘ইমারত নিমার্ণে সরকারের দায়িত্ব ও নাগরিকদের করণীয়’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সংগঠনের সভাপতি মশিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন রুবেল।
বিজিএমইএ ভবন কবে ভাঙা হবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কিছুই অসম্ভব না, একটি বড় স্থাপনা, একটি বড় বিজনেস কমিউনিটি সেখানে ছিল, দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাদের টাইম টু টাইম সময় দিয়েছেন। আদালত যদি তাদের সময় বৃদ্ধি করেন, আদালতের একটি কন্ট্রিনিয়াস ম্যান্ডাম আছে। আদালত যদি তাদের সময় বৃদ্ধি করেন, সেটা বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই।’
তিনি বলেন, ‘আদালত যদি তাদের সময় বৃদ্ধি না করেন আমরা তাদেরকে নির্ধারিত একটা টাইম ফ্রেম করে দেব। এর মধ্যে স্থাপনাটি ভেঙে ফেলতে হবে। আর না ভাঙলে আমরা অ্যাকশনে যাব। এ জাতীয় ভবন ভেঙে ফেলার কারিগরি প্রস্তুতি আমাদের আছে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অনেক মন্ত্রী, অনেক দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিজের সমালোচনা করতে একটু কুণ্ঠিতবোধ করেন। আমি করি না। কারণ আমি ফেরেশতা নেই, আমার প্রতিষ্ঠান শতভাগ সলিড নয়।’
তিনি বলেন, ‘এফআর টাওয়ারের তদন্ত প্রতিবেদন আশার পর তা আলোর মুখ দেখবে। পত্রিকায় প্রকাশ করা হবে। প্রতিবেদনে দায়ী হিসাবে যাদের নাম আসবে, তিনি রাজউকের কর্মকর্তা হন, বিল্ডিংয়ের মালিক হন, কিংবা জমির মালিক হন না কেন আইন অনুযায়ী সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইনের বাইরে থাকবে না। তিনি রাজউকের চেয়ারম্যার হন কিংবা মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা আমরা প্রমাণ করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অনুমোদনহীন ভবন বৈধতা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে নামে হোক, যে ভাবেই হোক না কেন সেটাকে ভেঙে ফেলার জন্য যা করার দরকার তাই করা হবে। যার দৃষ্টান্ন হলো র্যাংগস ভবন। সাম্প্রতিককালে আমরা ১৭টি ভবন ভেঙে ফেলেছি। ভবন অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে অব্যশ্যই সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিয়ম মানা হবে। এই নিয়মের বাইরে কেউ ভবন নিমার্ণ করে থাকলে তা ভেঙে দেওয়া হবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কারওয়ান বাজারের একটি পত্রিকা অফিসের নিকটবর্তী একটি বহুতল ভবন সিভিল এভিয়েশনের কাগজ জালিয়াতি করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘উপরে আল্লাহ, নিচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাঝখানে আমি কোনো চাপে বিশ্বাস করি না। আমি ভয় পাই আল্লাহকে আর সরকারের কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্য কোনো চাপের কাছে মাথা নত করি না। আমাকে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজ করছি। তিনি যেটা চাইবেন সেটা হবে। তিনি চেয়েছেন কোনো অনিয়ম, দুর্নীতিকে সহ্য করা যাবে না। এটা জিরো টলারেন্স।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ জনলে অবাক হবেন, ২০০৮ সালের পূর্বে কোনো প্লানে বিন্ডিংয়ের নিচে গাড়ি রাখার জন্য গ্যারেজ রাখতে হবে, এই ধরনের কোন বিধান ছিল না। এই বিধানটা আমরাই করেছি। তাই আমরা সময়মত আইনকে যুগোপেযোগী করছি।
তিনি বলেন, ‘কোনো এলাকায় অনিয়ম হলে রাজউক কর্মকর্তারা অভিযুক্ত হবেন। কীভাবে নির্মাণাধীন ১০ তলা ভবন ১৪ তলা হয়ে গেল। গাড়ির গ্যারেজ কীভাবে ফাস্টফুডের দোকান হয়ে গেল এ বিষয়ে অভিযান সারাবছর চলবে।’